Romantic Love Story 298849 এক…লাবণ্যময়
- আব্বু আব্বু, আমি আম্মুর কাছে যাবো।
- কিহ? এই মেয়ে কে তোমার আব্বু?
- কেন? তুমি আমার আব্বু।
- এমন বলেনা আম্মু। আমি তো তোমাকে আদর করে আম্মু বলি। কিন্তু আমি তো তোমার আব্বু না।
- না আমি এত কিছু জানিনা। তুমিই আমার আব্বু। নাহলে তুমি আমাকে প্রতিদিন চকলেট কিনে দাও কেন? পরলাম বিপদে।
বাচ্চাকাচ্চা দেখলে কার না আদর করতে ইচ্ছে করেনা?
কিন্তু একেবারে আমাকে আব্বু বানিয়ে দিলো?
এসব ভাবার আগেই আবার পিচ্চি বলে উঠলো।
- এইতো আম্মু এসে গিয়েছে।
আমি ভাবলাম বাঁচলাম বুঝি।
মেয়েটা এসে পিচ্চিটাকে কোলে নিলো।
আমার দিকে একটু তাকালো, তারপর বললো।
- আপনিই বুঝি নিঝুমকে প্রতিদিন চকলেক কিনে দেন?
আমি মাথা নাড়িয়ে বললাম।
- হুম।
- কেন? এতো চকলেট দেয়ার কি আছে? বাংলাদেশে কি আপনার চকলেট কিনে দেবার মানুষ অভাব পরেছে?
- না মানে আমার বাচ্চাকাচ্চা দেখলেই আদর করতে ইচ্ছে করে। আর আপনার বাবুটা তো অনেক কিউট দেখতে।
- ও হ্যালো। আমার বাবু না নিঝুম।
- বুঝলাম না। আপনাকে তো আম্মু আম্মু বলে ডাকছে।
- আপনাকেও তো আব্বু আব্বু বলে ডাকলো কিছুক্ষণ আগে। তারমানে কি আপনি নিঝুমের আব্বু?
- আরে তা হবে কেন? আমি তো আদর করে ডাকি।
- আমিও আদর করে ডাকি। কিন্তু নিঝুম আমারই মেয়ে।
- আপনার কথা আমার মাথায় ঢুকছেনা।
- মাথায় না ঢুকলেও চলবে। কানে ঢুকিয়ে নেন ভাল করে। নিঝুমের কাছে আসার কোন চেষ্টা করবেন না আর। ঠিকাছে?
- তাহলে নিঝুমের আব্বু আম্মু কোথায়? মেয়েটা যে প্রতিদিন আম্মু আব্বু করে। তাঁরা কোথায়?
- সেটা আপনার না জানলেও চলবে।
এরই মধ্যে পিচ্চি আবারো বলে উঠলো।
- আম্মু আম্মু কি বলো? তুমি আমার আম্মু না?
- হুম আম্মু তো। তোমার আম্মু।
- তাহলে আব্বুকে এসব কি বলছো?
- না না আম্মু। ইনি তোমার আব্বু না।
- তুমি বললেই হবে নাকি? ইনিই আমার আব্বু।
আমি আর কিছু না বলে স্কুলের সামনে থেকে চলে আসি।
সেখানে থাকলে আরো কথা কাটাকাটি হতো।
Romantic Love Story 298849
স্কুলের সামনে আমি বিনা কারনে যাইনা আবার বিনা কারনেই যাই।
অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে স্কুলটাকে গিরে।
স্কুল বলতে স্কুলের সামনে জলপাই গাছের নীচের বেঞ্চটাকে গিরে।
প্রতিদিন সুপ্তাকে আনতে যেতাম।
সুপ্তা আমার ভাইয়ের মেয়ে।
এখন আর সুপ্তা পৃথিবীতে নেই।
কি অভাগা কপাল।
সুপ্তা কেন ভাবী ভাইয়া কেউই পৃথিবীতে নেই।
ভাবী মায়ের সমান।
আমার মাকে আমি চোখে দেখিনি।
কিন্তু ভাবীকে দেখেছিলাম।
সারাবাড়ির কাজ আর পুরো বাড়ি একাই সামলাতো।
কোন কাজের মানুষ রাখতে দিতোনা।
সারাদিন থাকতাম সুপ্তাকে নিয়ে।
সুপ্তাকে নিয়ে কত জায়গায় ঘুরেছি।
পিচ্চিটা সারাদিন আমার কাঁধে ঝুলে থাকতো।
ছোটব্বু ছোটব্বু করতো সারাদিন।
স্কুল শেষে স্কুলের সামনে জলাপাই গাছের নীচের বেঞ্চে বসে থাকতো।
আমি আনতে না গেলে আসতোনা।
স্বয়ং ভাবী গেলেও আসতোনা।
আর সাথে যদি চকলেট না থাকতো তাহলে সেই কান্না আর থামায় কে?
একারণেই নিঝুমের কাছে যাই প্রতিদিন।
সেই বেঞ্চটাতেই বসে থাকে সুপ্তার মতো।
আমিও গিয়ে চকলেট দেই।
কদিনে ভাল সম্পর্কই তৈরি হয়ে যায়।
নিজের আব্বু ভাবতে কেন শুরু করে দিলো সেটা নিয়ে আমিই চিন্তায় আছি।
সুপ্তা ভাইয়া আর ভাবী তিন জনেই সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়।
গাড়ি ব্রেক ফেইল করেছিলো।
সেদিনের কথা আর মনে করতে চাইনা।
কিন্তু মনে না করতে চাইলেও সুপ্তা, ভাবী, ভাইয়ার কথা মনে পরে যায়।
কিন্তু আজকে বেশী মন খারাপ।
নিঝুমের কাছে যেতেও মানা করে দিলো!
বসে বসে কার্টুন দেখছি।
আসলে কার্টুন দেখা আমার সাজেনা।
সুপ্তার সাথে বসে প্রতিদিনই কার্টুন দেখতে হতো।
আর ভাবী এসে সামনে কিছু চকলেট রেখে যেতো।
এতো বড় বাড়ি।
কিন্তু মানুষ আছে চারজন।
আমি, বাবা, ছোটবোন, আর রহিম চাচা।
রহিম চাচার কাজ মূলত রান্না করা।
কদিন কেটে গেলো।
কিন্তু আর পারছিনা নিঝুমকে না দেখে থাকতে।
স্কুলের সামনে আবার গেলাম আজ।
মেয়েটার প্রতি সুপ্তার মায়া লেগে গিয়েছে।
দূর থেকে দাঁড়িয়ে দেখছি।
আজকে হাতে চকলেট, আইস্ক্রিম কিছুই নেই।
কিছুক্ষণ পর নিঝুমকে নিতে সেই মেয়েটা আসলো।
কোনভাবে মনে হয় আমাকে দেখে ফেলেছে।
নিঝুমকে নিয়ে আমার সামনে আসলো।
আমার লজ্জা হচ্ছে।
কিন্তু আমি নিঝুমের সামনে সামনে যাইনি।
আমাকে দেখতেই নিঝুম বলে উঠলো।
- আব্বু আব্বু তুমি কদিন ধরে আসোনা কেন?
আমি কি উত্তর দিবো বুঝতেছিনা।
পিছনের দিকে ফিরে হাটতে শুরু করবো এমন সময়।
- এইযে দাঁড়ান।
Romantic Love Story 298849
আমি দাঁড়িয়ে বললাম।
- আমি নিঝুমের কাছে যাইনি। আর চকলেট, আইস্ক্রিম কিছুই দেইনি।
মেয়েটা হাসলো। তারপর বললো।
- সেদিনের জন্য দুঃখীত। সমস্যা নেই আপনি নিঝুমের কাছে আসতে পারেন।
আমি অনেক খুশী হয়ে বললাম।
- সে কিছুনা।
- আজ তাহলে গেলাম।
আমার সামনে একটি রিকশা ডেকে নিয়ে দুজনে চলে গেলো।
মনটা খুব ভাল হয়ে গেলো।
আমাদের পরবর্তী গল্পগুলো পড়তে আমাদের সাথেই থাকুন ।
ধন্যবাদ সবাইকে।💕💖
1 Comments
Wow
ReplyDelete