ভাই বোনের গল্প-Romantic love story 298849
Romantic love story 298849 রোজকার মতো আজও আমার ব্রাশে আঠা লাগানো দাঁতে দেওয়ার সাথে সাথে কি বিচ্ছিরি লাগছে।
মা ও মা বাদরটা কই?
বাদর আবার কে?
আমার ব্রাশে অাঠায় লাগায় যে।তুমি কি আজও চুপ করে থাকবা?
আচ্ছা স্কুল থেকে আসুক দেখছি।
বাবা কই?
অফিস গেছে।
সবাই কি তোর মতো ৮টার আগে ঘুম ভাঙ্গেনা।
আচ্ছা এখন নাহ ঘুমালে কবে ঘুমাবো।মা বাবারে তো কালকে বললাম রবিবারে আমার সেমিষ্টার ফি দেওয়ার শেষদিন।
আচ্ছা দেখি রাতে কি বলে।তোর টিউশনের টাকাটা পাইছিস এ মাসে?
নাহ,আন্টি বললো কি যেন সমস্যা দুইমাসের টাকাটা একবারে দিবে।
তাহলে তো তোর বাবার একটু সমস্যা হবে।তবুও দেখছি কি বলে!
মা রে এবার তোর বিয়েটা দিতে পারলে তোর বাবা একটু হালকা হয়।
এই তো আর একটা বছর গ্রাজুয়েশন টা শেষ হইলে তোমাদের আর চিন্তা করতে হবে না।তারপর যেকোনো একটা চাকরি পাবো।তারপর আর বাবার এত পরিশ্রম করতে হবে না।
কোনো প্রয়োজন নাই।তোমার চাকরি করা লাগবে না।তোমার বাবার যা আছে তা দিয়ে তোমার বিয়েটা ছোটো খাটো করে দিতে পারলেই হলো।
এত বিয়ে বিয়ে করো না তো।
রেডি হয়ে নে ভার্সিটি যাবি তো?
হুম।
ফ্রেশ হয়ে ব্রেকফাস্ট করে ভার্সিটি গেলাম।
তারপর ভার্সিটি শেষে ২টা টিউশন শেষ করতে করতে ৫টা বেজে গেছে।
বাসায় এসে দেখি মা রান্না ঘরে।
মাকে ডাকতে ডাকতে ঘরে ঢুকলাম।
আসছিস?
হ্যাঁ,একটু জল দাও তো।
দিচ্ছি।
রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে মায়ের দেওয়া জল টা খাবো অমনি কোথায় থেকে উল্লুকটা সামনে।
কি রে দিভাই তোর নাকি পুটলা দার সাথে বিয়ে ঠিক হইছে?
(জল টা ঢোক গিলে)আজেবাজে কথা বলবি না।
মা তো তাই বললো পাশের বাড়ির আন্টির কাছে।
দাঁড়া দেখাচ্ছি মজা। Romantic love story 298849 মা দেখো না শুভ্র আমায় কি বলে।
যেমনি মা ঘরে ঢুকেছে তেমনি সে প্রস্থান।
কি আবার হলো??
শুভ্র বলে আমার নাকি পুটলা দার সাথে বিয়ে।
আচ্ছা ও বললেই কি হলো।ছোট মানুষ মজা করে।
তুমি তো তাই বলবা।সকালে আমার ব্রাশে কি করছিলো মনে নাই?
আচ্ছা সামনে পাইলে বকা দিবো আচ্ছা করে।
সদর দরজা থেকে বাবার ডাক।
কই রে কথা মা...আসছিস?
হ্যাঁ বাবা অাসছি নাও ফ্রেশ হও।আমি একটু চিনি জল করে দিচ্ছি।
আচ্ছা।
এই বাসায় দুই পক্ষ আমি আর বাবা,মা আর বিচ্ছু টা।
প্রতিদিন সে আমায় জ্বালায়।মা কে নালিশ করেও কোনো লাভ নাই সে তো শুভ্র অন্ত প্রাণ।
আর বাবার রোজকার পরিশ্রম আর ক্লান্তিকর মুখটা আমায় নালিশ করতে দেয় না।যাক সে কথা।
কথা মা বলে বাবার ডাক
বলো বাবা?
এই নে তোর সেমিষ্টার ফি।
খুব কষ্ট হলো বাবা।
না রে মা তেমন না।
আমি টিউশনির টাকাটা পেলেই তোমারে কিছু দিয়ে দিবোনি।
লাগবে না,তুই তোর পছন্দমতো কিছু কিনে নিস।
আমি চালিয়ে নেবো।
আচ্ছা বাবা।
কাল আমার বন্ধুর ছেলে আকাশের বাসায় আসার কথা।তুই বাসায় থাকিস।
ছেলেটা এবার এমবিএ কমপ্লিট করলো।ওর বাবার ব্যবসাটা দেখছে আপাতত।
তোর ওকে ভালোই লাগবে।
হুম।
আমি বুঝতে পারছি বাবা কেন আকাশের সাথে আমার পরিচয় করাতে চাচ্ছে।সচরাচর মেয়েদের পাত্র পক্ষের কথা মা বলে কিন্তু আমার সাথে বাবার সম্পর্ক টাই বেশি ফ্রি।তাই আর কথা না বাড়িয়ে খেয়ে দেয়ে শুয়ে পড়লাম।
তবে শুয়েছি অনেকটা সময় কিন্তু ঘুম আসছে না।
ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখি
রাত ১১টা ১৭বাজে।
হঠাৎ অপরিচিত নাম্বার থেকে ফোন অাসলো।
প্রথম বার রিসিভ করিনি।
দ্বিতীয় বার ফোন দেওয়াতে রিসিভ করতেই অপর পাশ থেকে একটা অপিরিচিত কন্ঠ ভেসে আসলো।
হ্যালো,আমি অাকাশ।আপনি কি কথা?
জ্বি,আমি কথা বলছি।
আপনি হয়তো আমার কথা আংকেলের কাছে শুনেছেন।
জ্বি...বাবা বলেছে।
আসলে আপনার সাথে আমার দেখা করার কথা ছিলো কালকে।কিন্তু কাল আমি একটু ব্যস্ত থাকবো।পরশু আমরা বাইরে কোথাও দেখা করবো প্লিজ।
আচ্ছা,ঠিক অাছে।
শুভ রাত্রি।
আপনাকেও।
ফোনটা কাটার পর আমি ভাবছিলাম।ছেলেটা কেমন হবে কে জানে!
বাবার কাছে তো অনেক ভালো ভালো কথা শুনলাম।কথা বলেও খারাপ মনে হলো না।
রাতটা এপাশ ওপাশ করে কাটিয়ে দিলাম।
খুব ভোরে ঘুম ভেঙ্গে দেখলাম।
মা উঠে গেছে।
শুভ্রর রুমের পাশ দিয়ে যেতেই দেখি শুভ্র পড়ছে।
আমায় দেখেই বলে উঠলো।
কি রে পেত্নী,তোর নাকি ভুতকুমার জুটেছে।
সকাল সকাল মেজাজ খারাপ করিস না।
আচ্ছা চুপ করলাম।
পড়ার বেলায় তো কাঁচকলা আর আমার পিছে লাগার জন্য খুব পারো নাহ।
বকা ঝকা করে রুমে আসলাম।
রুমে এসে দেখলাম।আকাশের নাম্বার থেকে "শুভ সকাল" বার্তা।
মেসেজটা পেয়ে রাগটা একটু কমলো।
মেসেজটা ও রিপ্লে দিলাম।
আকাশকে এর আগে ছোটো বেলায় অনেক বার দেখেছিলাম।বড় হওয়ার পর আর দেখা হয় নাই।
অনেক উৎকন্ঠায় দিনরাতটা কাটলো।
আজকে ভার্সিটি শেষে আকাশের সাথে দেখা করবো।
হুম,প্রথম এভাবে কারো সাথে দেখা করছি।
তাও বাসার বাইরে দেখা করছি আকাশের ইচ্ছেতে।
বিকেল ৪টায় আকাশের ফোন পেয়েই একটা কফিশপের সামনে দাড়িয়ে আছি আমি।
ছেলেটা বেশ দেরী করে আসলো।
সাদা শার্ট,নীল জিন্স আর চোখে সানগ্লাস পড়া ছেলেটাই আকাশ।
কথাবার্তা শেষ করে বাসায় ফিরে দেখি মা আমার সামনে দাড়িয়ে আছে উদ্বেগ নিয়ে।
কি রে মা,আকাশকে কেমন দেখলি?
ভালো।
রাতে খাবার টেবিলে আমার বিয়ের কথাটা নিয়ে বাবা-মা টুকটাক আলোচনা করছে।আর আমি আর শুভ্র খাচ্ছি।
পরের দিনে খুব সকালে শুভ্র আমার রুমে ঢুকে বেশ মন খারাপ নিয়ে বলছে তুই চলে যাবি?
হুম,এবার তো তোর রাজত্ব।একা একা সব ভোগ করবি।
মুখভার করে চলে গেলো।কিছু বললো নাহ।
হতে পারে রাগ করছে।
যাক ঝগড়া তো করে নাই। বাঁচা গেলো।
বেশ ক'দিন শুভ্র আমার সাথে কথা বলে না।
জানি না কি হইছে?
দেখা হলে এড়িয়ে চলে।
দেখতে দেখতে বিয়ের দিন চলে এলো।কাল আমার বিয়ে।
সকাল সকাল ঘুমিয়ে পড়লাম।
খুব ভোরে শুভ্রর ডাকে ঘুম ভাঙ্গলো আমার।রুমে এসেই ফুপিয়ে কান্না করতে লাগতো।আমার ছায়ার সাথেই যে ঝগড়া করে সে আমার বিয়ের দিনে আমার জন্য কান্না করে।কান্নার কারণ আমি চলে যাবো।আমায় জড়িয়ে তার কান্না আমার চোখে জল এনে দিয়েছে।হাতের মুঠো থেকে একটা ছোট্ট কানের দুল পড়িয়ে দিলো শুভ্র আমার কানে।যে রোজ রোজ আমার সাথে ঝগড়া করে বিরক্ত সে যে আমায় এতটা ভালোবাসে আমি কল্পনাও করিনি।
সবাই ঠিকই বলে "পৃথিবীর সবচেয়ে পবিত্র ভালোবাসার আসল নাম ভাই -বোন"।
আমাদের পরবর্তী গল্পগুলো পড়তে আমাদের সাথেই থাকুন ।
ধন্যবাদ সবাইকে।💕💖
#ভাই_বোন
1 Comments
Good
ReplyDelete